Uncategorized

Mazda Axela রিভিউ

আজকে আলোচনা করবো, মাজদা এক্সেলা সম্পর্কে। মাজদা, জাপানের বিখ্যাত গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম। মাজদা তাদের কাস্টমারদের চাহিদাকে ব্যাপকভাবে প্রাধাণ্য দিয়ে থাকে। যার কারণে, মাজদার গাড়ি তাদের ভক্তদের কাছে অনেক পছন্দের হয়ে থাকে। মাজদার এন্ট্রি লেভেলের একটি সেডান গাড়ি হচ্ছে এই মাজদা এক্সেলা। বিশ্বব্যপী এই গাড়ি মাজদা থ্রি নামে পরিচিত। এন্ট্রিলেভেল সেডান হলেও, এই বাজেটের যেইকোনও সেডানের সাথে এই গাড়ি টেক্কা দিতে সক্ষম! অসংখ্য আধুনিক ফিচার্স দিয়ে ভর্তি এই গাড়ি। এক্সেলাতে মোট চারটা প্যাকজ আছে। যেইগুলো হলো যথাক্রমেঃ সি, এস, এস-ট্যুরিং এবং প্রো-একটিভ।  আজকের আলোচনা ২০১৭ মডেল ৩য় জেনারেশন মাজদা এক্সেলা প্রো-একটিভ প্যাকেজ সম্পর্কে। যার প্রোডাকশন চলেছিলো ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত। বর্তমানে মাজদা এক্সেলার দাম ২২-২৫ লাখ টাকার মতো।

ডিজাইনঃ এই গাড়ির ডিজাইন করা হয়েছে, ইয়াং জেনারশনের পছন্দকে কেন্দ্র করে। যার কারণে এক্সেলার ডিজাইন একটু স্পোর্টি। গাড়িটা যেইকোনও দিক থেকে দেখলেই ভালো লাগবে। এক্সেলার লাইটগুলো বেশ সুন্দর। ফ্রন্ট লাইটের সাথে প্রোজেকশন এলইডি হেডোলাইট থাকে এবং ইন্ডিকেটর লাইটগুলো নিচের দিকে থাকে। এছাড়াও ফগ লাইট তো আছেই! পার্কিং লাইট দেখতে বেশ সুন্দর। ফ্রন্টগ্রিল একটু বড় সাইজের। যা দেখতে বেশ সুন্দর দেখায়। গ্রিলের চারিদিকে নিকেলের টাচ আছে। এছাড়াও সাইডমিরোর গুলো অনেকটা স্পোর্টস কার এর মতো দরজার সাথে লাগানো। যা বেশ আকর্ষনীয়। পেছনের লাইটগুলোও সামনের লাইটের ডিজাইনের সাথে মিল আছে। এই গাড়ির পেছনের ফেন্ডারগুলো একটু ফোলানো। যা স্পোর্টি ডিজাইনের ভাইব প্রদর্শন করে। এছাড়াও সামনে এবং পেছনে মোট ৬টি পার্কিং সেন্সর আছে। এছাড়াও এই গাড়িতে ইমার্জেন্সি ব্রেক এসিস্ট অথবা সিটি ট্রাফিক ব্রেক এসিস্ট আছে! গাড়িকে দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে এইগুলো বেশ কার্যকর। পেছনের ট্রাঙ্ক স্পেসে বেশ ভালো স্পেস আছে। এক্সেলার সাথে ১৬ ইঞ্চির রিমস আসে। রিমসগুলোও দেখতে অনেক সুন্দর!

ইন্টেরিয়রঃ মাজদা এক্সেলার ইন্টেরিয়র এই বাজেটের গাড়িগুলোর মধ্যে সবচাইতে বেশি সুন্দর! ইন্টেরিয়র ডিজাইন কিছুটা ইউরোপিয়ান গাড়ির মতো দেখতে। ৭ ইঞ্চি সাইজের ইনফোটেইনপমেন্ট সিস্টেমটা বেশ সুন্দর এবং আনকমন ডিজাইনের। সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয়গুলো হলো, এই গাড়িতে বোজ সাউন্ডসিস্টেম, ডুয়েল জোন ক্লাইমেট কন্ট্রোল, প্রক্সিমিটি সেন্সর এবং হেডসআপ ডিসপ্লে আছে! এই ফিচার্সগুলো এই বাজেটের কোনও গাড়িতে নাই। স্টেয়ারিং ও বেশ সুন্দর! লেদার র‍্যাপ করা। স্টেয়ারিং এর সাথে অনেকগুলো বাটন আছে। যার সাহায্যে ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম এবং গেইজ ক্লাস্টার কন্ট্রোল করতে পারবেন। এছাড়াও ২৩-২৪ লাখ টাকা মূল্যের এই গাড়ির সাথে প্যাডেল শিফটার ও আছে! যার মধ্যমে আপনি ম্যানুয়্যালি গিয়ার চেঞ্জ করতে পারবেন। গেইজ ক্লাস্টার দেখতে স্পোর্টি ডিজাইনের। সাথে ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং এলালগ মিটার দুটোই আছে। গিয়ার বক্স দেখতে অনেকটা স্পোর্টস কারের মতো। দেখতে অনেকটা ম্যানুয়্যাল ট্রান্সমিশন এর মতো। ট্র্যাকশন কন্ট্রোল তো আছেই। এছাড়াও গ্লাভ বক্সে বেশ ভালোমানের স্পেস আছে। সামনে দুইটা এবং পেছনে একটা, মোট ৩টা রুমলাইট আছে। সামনে একটি সামনগ্লাস হোন্ডার আছে। সানশাইন প্রোটেকটরের সাথে আয়না এবং লাইট আছে। এছাড়াও এই গাড়ির সিটগুলো বেশ সুন্দর। স্পোর্টি ডিজাইন সেমিবাকেট সিট আসে এই গাড়ির সাথে। ড্রাইভার সিটের সাথে পাওয়ার এডজাস্টেবল সিস্টেম থাকে। পেছনের সিটে আর্মরেস্ট এবং সাথে দুইটি কাপহোল্ডার আছে। পেছনের সিটগুলোও সেমিবাকেট।

ইঞ্জিনঃ মাজদা এক্সেলার সাথে ১.৫ লিটার ফোর সিলিন্ডারের ইঞ্জিন থাকে। যার আউটপুট হচ্ছে ১১৫ হর্সপাওয়ার এবং ১৫০ নিউটন মিটার টর্ক। এই গাড়ির সাথে মাজদার স্কাই-একটিভ টেকনলজি থাকে, যা এই গাড়ির মাইলেজ বাড়াতে বেশ সহায়তা করে। শহরের মধ্যে ৮-১০ কিলোমিলার এবং হাইওতে ১১-১৪ কিলোমিটার মাইলেজ পাওইয়া যায়। এই গাড়ির ইঞ্জিন পার্ফর্মেন্স বেশ ভালো। বিশেষ করে এই গাড়ির হ্যান্ডেলিং এই বাজেটের সব গাড়ির চাইতে ভালো। যার কারণে মাজদা এক্সেলা ড্রাইভ করতে অনেক ভালো লাগবে।

সবমিলায় এই ২২-২৫ লাখ টাকা বাজেটের মধ্যে মাজদা এক্সেলা এককথায় সেরা ডিল! ডিজাইন,পার্ফর্মেন্স, ইন্টেরিয়র ফিচার্স সবকিছু মিলায় বাজেট বেস্ট একটা গাড়ি। বর্তমান সময়ে এই গাড়ি বাদ দিয়ে এই দামে এক্সিও কেনা এক কথায় বোকামি। এই গাড়ির পার্ফরমেন্স,ডিজাইন,ফিচার্স এইসব তুলনা করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এলিয়েন প্রিমিও থেকে ও এগিয়ে থাকবে। আর মাজদার গাড়ি অনেক রিলাইয়েবল। কিনবেন, একটু মেইন্টেইন করে চালাবেন। আপনার পয়সা উসুল ও হবে এবং এই গাড়ি বেশ ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন।

Leave a Reply