Uncategorized

Honda Civic রিভিউ

▪️আজকের আলোচনা Honda Civic Turbo (sedan) সম্পর্কে। ৩৯-৪২ লাখ টাকায় আমাদের দেশে এই গাড়ি বেস্ট একটা অপশন। এই গাড়ির প্রোডাকশন শুরু হয় ১৯৭২ সালে। বর্তমানে হোন্ডা সিভিক এর ১১ তম জেনারেশনের প্রোডাকশন চলছে। আমাদের আজকের আলোচনা হোন্ডা সিভিক এর ১০ম জেনারেশন সম্পর্কে। হোন্ডা সিভিক এর ১০ম জেনারেশনের প্রোডাকশন শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকে। আগের জেনারেশন থেকে এটা অনেক বেশি সুন্দর। ইন্টেরিয়র+ এক্সটেরিয়র দুইটাই আগের তুলনায় যথেষ্ট সুন্দর হইছে। জাপানের বাজার ছাড়াও ইউরোপ আমেরিকার বাজারে এই গাড়ির বেশ জনপ্রিয়তা আছে। বর্তমান সময়ে ২০২০ মডেলের হোন্ডা সিভিক ব্রান্ড নিউ ০ মাইলেজের গাড়ির দাম প্রায় ৪০ লাখ টাকার আশপাশে।

▪️এক্সটেরিয়রঃ

 হোন্ডা সিভিক টার্বো এর এক্সটেরিয়র ডিজাইন স্পোর্টি ধরনের। যা দেখতে বেশ সুন্দর। সামনে থ্রিডি ডিজাইন এলইডি হেডলাইট+ ফগলাইট আছে। হেডলাইট অনেক সুন্দর।হেডলাইটের সাথে ডিআরএল আসে। এই গাড়ির হেডলাইটের জন্য গাড়িটাকে দেখতে অনেক আকর্ষণীয়  দেখায়। পাশের ফেন্ডারগুলো একটু ফোলানো, যার কারণে একটা স্পোর্টি ভাইব আসে গাড়িটা থেকে। সাইডভিউ মিররগুলো বেশ স্টাইলিশ। ওয়াইপার এর সাথে রেইন সেন্সর থাকে। ফ্রন্ট সাইড এবং ডোর হ্যান্ডেল এর সাথে বেশ কিছু নিকেলের টাচ আছে। কি লেস এন্ট্রি তোহ থাকছেই। পেছনের টেইললাইট  থ্রিডি ডিজাইনের যেটা দেখতে বেশ সুন্দর। একদম আনকমন ডিজাইন। বাইরে দেখতে এইবাজেটের অন্য যেইকোনোও  গাড়ির তুলনায় সিভিক অনেক বেশি আকর্ষনীয়। সিভিকের সাথে ১৭ ইঞ্চির এলয় রিমস আসে এবং ৪ চাকাতেই ডিস্কব্রেক থাকে। এই গাড়ির ফুয়েল ট্যাঙ্ক ক্যাপাসিটি ৫০ লিটার। পেছনের কার্গো স্পেস অনেক বড়। এছাড়াও এক্সট্রা স্পেস দরকার হইলে পেছনের সিট ফোল্ড করে কার্গো স্পেস বাড়ানো যায়।  গাড়ির সাথে স্পেয়ার হুইল+ টুলস কিট আসে।  

▪️ইন্টেরিয়রঃ

হোন্ডা  সিভিক এর ইন্টেরিয়র অসাধারণ দেখতে। কাছাকাছি বাজেটের অন্যান্য গাড়ির তুলনায় এর ইন্টেরিয়র ডিজাইন বেশ প্রিমিয়াম। ইন্টেরিয়র ডিজাইন সিম্পলের মধ্যে বেশ সুন্দর ও দেখতে স্পোর্টি।সিভিক টার্বোর সাথে ডুয়েল জোন এসি কন্ট্রোল থাকে। গেইজ ক্লাস্টার পুরাটাই ডিজিটাল।গেইজ ক্লাস্টারে তিনটা পার্ট আছে। ডানপাশের স্ক্রিনে ফুয়েল মিটার, মাঝের স্ক্রিনে ডিজিটাল স্পিডোমিটার,আরপিএম, মাইলেজ এবং বামসাইডের স্ক্রিনে গাড়ি কতটুকু গরম হচ্ছে সেইটা দেখায়। সিভিক টার্বোর সাথে লেদার র‍্যাপ স্টেয়ারিং হুইল থাকে যেটা টেলিস্কোপিক এডজাস্টেবল। স্টেয়ারিং এর সাথে স্টেয়ারিংকন্ট্রোল,  ক্রুজ কন্ট্রোল এবং প্যাডেল শিফটার থাকে। যার কারণে এই গাড়ি ম্যানুয়্যাল ভাবেও ড্রাইভ করার সুযোগ আছে। স্টেরারিং থেকে ভয়েস কন্ট্রোল, কল রিসিভ, মাল্টিমিডিয়া চেঞ্জ করা যায়।এছাড়াও পুশ স্টার্ট তোহ থাকছেই। সামনে দুইটা ইউএসবি এবং এইচডিএমআই পোর্ট আছে। ইলেকট্রনিক পার্কিং ব্রেক এবং ফুয়েল সেইভ করার জন্য ইকন মোড আছে। হোন্ডা সিভিকের বেশিরভাগ ইউনিটের সাথেই সানরুফ থাকে। উপরে সানভাইজরের সাথে মিরর এবং লাইট থাকে। এছাড়াও সিভিক টার্বোর সাথে ৭ ইঞ্চির টাচস্ক্রিন ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম এবং পেছনের রিভার্স ক্যামেরা আছে। সিটি ট্রাফিক ব্রেক এসিস্ট, লেইন ডিপার্চার এসিস্ট, ট্র্যাকশান কন্ট্রোল আছে। মাঝখানে ও সামনে-পেছনের  দরজার সাথে বেশ কয়েকটা কাপ হোল্ডার্স আছে। সিটগুলা লেদারের যেগুলা দেখতে অনেক সুন্দর। এই গাড়ির ব্লাক ইন্টেরিয়রের সাথে ব্লাক সিটের কম্বিনেশন অসাধারণ। সামনে দুইটা রুমলাইট এবং পেছনে একটা রুমলাইট থাকে। পেছনের সিট এ যথেষ্ট হেডরুম+লেগরুম আছে। পেছনের জানালাটাও বেশ বড়। মাঝখানে আর্ম রেস্ট ও দুইটা কাপহোল্ডার্স আছে। সামনে ৪টা এয়ারভেন্টস থাকলেও  পেছনে কোনও এয়ারভেন্ট নাই। পেছনের ট্রান্সমিশন হাম্বটাও বেশ উঁচা। এই গাড়ির সাথে সামনে ৪ টা ও পেছনে ২টা সহ মোট ৬টা এয়ার ব্যাগ আছে। সাউন্ড সিস্টেম ও যথেষ্ট ভালো।

▪️ইঞ্জিনঃ

 হোন্ডা সিভিক টার্বোর সাথে ১.৫ লিটার ফোর সিলিন্ডার সিক্স স্পীড ভিটেক টার্বোচার্জড ইঞ্জিন থাকে। যার আউটপুট ১৭৪ হর্সপাওয়ার ও ২২০ নিউটন মিটার টর্ক। ০-১০০ কিলোমিটার স্পীড উঠতে এই গাড়ীর সময় লাগে মাত্র ৮.১ সেকেন্ড। এই গাড়ীর ইঞ্জিন পার্ফোরমেন্স অসাধারণ। সিভিক টার্বোকে এন্ট্রিলেভেলের স্পোর্টস কার বললেও ভুল হবে না।

▪️সবমিলিয়ে এই বাজেটের মধ্যে এই গাড়ি বাংলাদেশের হিসেবে বেস্ট একটা অপশন। হোন্ডা সিভিক এর সাথে অনেকে টয়োটা এলিয়ন,প্রিমিওর তুলনা করে থাকেন। কিন্তু এলিয়ন বা প্রিমিওর সাথে এই গাড়ি কোনও অংশেই তুলনা করার মতো না। এলিয়ন বা প্রিমিও থেকে সিভিক অনেক এডভান্স। আর সিভিকের ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স এর ধারেকাছেও এলিয়ন বা প্রিমিও নাই।

Leave a Reply