Uncategorized

গাড়িতে সিএনজি করার সুবিধা এবং অসুবিধা কি কি?

সিএনজি এর পূর্ণরূপ হচ্ছে, Compressed Natural Gas (CNG)। বাংলাদেশে অকটেন মূল্য  ৮৯ টাকা থেকে এক লাফে ১৩৫ টাকা হওয়ার কারণে, বিকল্প জ্বালানী হিসেবে নতুন করে সিএনজি করার কথা ভাবছেন অনেকেই। আমাদের দেশে সিএনজিতে কনভার্ট করে গাড়ি চালানোর প্রচলন অনেক আগে থেকেই! যদিও মাঝে হাইব্রিড গাড়ির জনপ্রিয়তা, এলপিজি এইসবের কারণে সিএনজি প্রচলন অনেকটাই কমেছিলো। তেলের দাম বাড়ার কারণে হয়তো জ্বালানী খরচ বাঁচাতে অনেকেই তার ব্যক্তিগত গাড়িকে  সিএনজিতে কনভার্ট করবেন নাকি চিন্তাভাবনা করছেন। তাদের জন্যই উক্ত পোস্ট!

সুবিধা:

১.CNG গ্যাসের সবচেয়ে বড় সুবিধে হলো তেল খরচ কম। আমদের দেশে গ্যাসের দাম তেলের তুলনায় অনেক কম!

২. সিএনজি চালিত গাড়িতে ইঞ্জিন ওয়েল অকটেন এ চালিত গাড়ির চাইতেও বেশিদিন সার্ভিস দিতে পারে। যার ফলে ইঞ্জিন ওয়েল চেঞ্জ করার খরচ কিছুটা কমে যায়।

৩. সিএনজি পরিবেশের জন্য অকটেন থেকেও ভালো।  যেমন প্রতি ১০০ কিলোমিটারে, একটা অকটেন চালিত গাড়ি  ২২ কেজি কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে, অন্যদিকে সিএনজি করে মাত্র ১৬.৩ কেজি। অর্থাৎ, সিএনজি পরিবেশের ক্ষতি কম করছে!

অসুবিধা:

১. প্রথম অসুবিধা, CNG সিলিন্ডার আকারে অনেক বড় এবং ভারী হয়। সাধারণত বেশিরভাগ মানুষ ৬০ লিটারের ট্যাংক বসায়। যার কারনে গাড়িতে অনেক বড় একটা স্পেস ছেড়ে দিতে হয়। ৬০ লিটার মানে প্রায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সমান ওজন! অর্থাৎ আপনার গাড়িকে সবসময়ই বাড়তি একজন মানুষের সমপরিমাণ ওজন বহন করতে হচ্ছে! যা আপনার গাড়ির জন্য ক্ষতি

২- সিএনজি করা গাড়িতে বাটি বসানো লাগবেই! যা আপনার গাড়ির সৌন্দর্য এবং কম্ফোর্ট নষ্ট করবে।

৩. সিএনজিতে পার্ফমেন্স কম- সিএনজিতে ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স খারাপ হয়ে যায়। ড্রাইভিং এর ক্ষেত্রে আপনি তেলের চালানোর মতো কম্ফোর্ট পাবেন না সিএনজি গাড়ি থেকে।

৩. বাংলাদেশে সিএনজি অকটেনের মতো খুব বেশি এভেইলেবল না। বাংলাদেশের এখনো অনেক জায়গা আছে, যেখানে এখনো ন্যাচারাল গ্যাস নাই! সেইসব অঞ্চলে আপনি সিএনজির কোনও ফিলিং স্টেশন ও খুঁজে পাবেন না। যা ভোগান্তির কারণ হতে পারে!

৪. সিএনজি ওভারহিট হয়। তেলের গাড়ির তুলনায় প্রায় ১০-১৫% বেশি হিট হয়। সেটার জন্য সিএনজি ফ্রেন্ডলি ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতে হবে। বাজারে সিএনজির জন্য স্পেশাল কিছু ইঞ্জিন ওয়েল পাওয়া যায়।

৫. সিএনজি সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়। যদিও এরকম রেকর্ড খুব কমই আছে যে সিএনজি নিজে নিজে ব্লাস্ট হইছে! তারপরও একটা ঝুঁকি থাকে। যদি অন্য কোন জায়গা থেকে আগুন ধরে পরে সিএনজি সিলিন্ডারে হিট করে, তাহলে সেকেন্ডের মধ্যেই সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়ে পুরা গাড়িতে  আগুন ধরে যায়। সেকেন্ডের মধ্যেই এতো তাড়াতাড়ি আগুন ছড়ায় যে, যার কারণে যাত্রী বের হওয়ার সুযোগ ও থাকে না। অর্থাৎ আপনি আপনার গাড়ির সাথে সারাক্ষণ একটা বোমা নিয়ে ঘুরছেন!

৬. অনেকেই বলে থাকেন, সিএনজি ইঞ্জিনের আয়ু কমায় ফেলে। যদিও এই ব্যাপারে আমি পুরোপুরি নিশ্চিত না। তবে কথা সত্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে।  কারণ গাড়ির ইঞ্জিন ডিজাইন করা হয়েছে অকটেন এ চালানোর জন্য। সেইখানে আপনি অন্য জ্বালানী ব্যবহার করছেন! সেটা নিশ্চয়ই ইঞ্জিনের ক্ষতি করবে। ইঞ্জিনের ক্ষতি মানে, ইঞ্জিনের আয়ু কমে যাওয়া। একটা উদাহরণ বলি, আপনি বাঙালী মানুষ, আপনি খাবারের সাথে পানি খেয়ে অভ্যস্ত।  আপনি পানির পরিবর্তে সবসময় কোন্ড ড্রিংকস খেয়ে থাকতে পারবেন? পারবেন না নিশ্চয়ই। গাড়ির ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এমনি।

পরিশেষে, আপনি কি করবেন?

 যদি আপনি গাড়ির জ্বালানী  খরচ বাঁচাতে চান, তাহলে সিএনজি করতে পারেন। এটাই একমাত্র কারণ সিএনজি করা। এছাড়া অন্য আর কোনও কারণ নেই।  হ্যা, আরেকটা কারণ আছে, পরিবেশ বাঁচাতে চাইলেও সিএনজি  করতে পারেন। তবে আমার মনেহয় না বাংলাদেশের কেও পরিবেশের কথা চিন্তা করে গাড়ি সিএনজিতে কনভার্ট করে!

যদি জ্বালানী খরচ বাচানোর চিন্তা না থাকে, তাহলে অকটেনই ভালো। সবচেয়ে ভালো হয় হাইব্রিড গাড়ি ব্যবহার করা। তেল সাশ্রয়ী, দাম ও নন-হাইব্রিড গাড়ির চেয়ে কম!

Leave a Reply